খেলা

গম্ভীরের নয়া দিগন্ত:সব ফরম্যাটেই খেলোয়াড় বাছাইয়ে পরিবর্তন

ভারতের প্রধান কোচ হিসাবে গৌতম গম্ভীরের প্রথম মিশন শুরু হবে শ্রীলঙ্কা সফর দিয়ে, যা শুরু হবে ২৬শে জুলাই থেকে। এই সপ্তাহের শুরুতে গম্ভীর রাহুল দ্রাবিড়ের জায়গায় ভারতের নতুন কোচ হিসাবে নিযুক্ত হওয়ায় ভারতীয় ক্রিকেটে এক নতুন যুগের সূচনা হলো।

ভারতীয় ক্রিকেটে গম্ভীরের প্রত্যাবর্তন! তবে এবার আর ব্যাট হাতে নয়, বরং অন্যরূপে।

ভারতের নবনিযুক্ত প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর বলেছেন যে তার খেলোয়াড় বাছাই করার পদ্ধতি কোন নির্দিষ্ট ফরম্যাট এর ওপর ভিত্তি করে হবে না, কারণ তিনি মনে করেন যে, যারা যথেষ্ট ভালো খেলবে তাদের তিনটে ফরম্যাটেই খেলা উচিত। দ্রাবিড়ের প্রস্থানের পাশাপাশি ইতিমধ্যেই কোহলি, রোহিত এবং জাদেজা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে তাদের অবসর ঘোষণা করেছেন।

গম্ভীর এবং ভারতীয় দলের সামনে এখন একটি ব্যস্তময় কর্মসূচি রয়েছে, কারণ সামনেই শ্রীলঙ্কা সফর এবং ইতিমধ্যেই গম্ভীরের অধীনে কোন প্লেয়াররা দলে খেলতে পারেন  তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। কিন্তু গম্ভীর তার বাছাইপর্ব স্পষ্ট করেছেন এবং তিন ফরম্যাটের  জন্যই নিযুক্ত প্লেয়ারদের ওপর দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করেছেন।

Goutam gambhir, Virat Kohli,Rohit Sharma
Goutam gambhir, Virat Kohli,Rohit Sharma

গম্ভীর স্টার স্পোর্টস কে একটি ইন্টারভিউতে বলেছেন- “আমি একটি জিনিসে বিশ্বাস করি, যদি তুমি ভালো খেলো তবে তোমার তিনটে ফরম্যাটেই খেলা উচিত। আমি ইনজুরি ম্যানেজমেন্ট এর উপর কখনই খুব বিশ্বাসী ছিলাম না, তুমি আঘাত পেয়েছ তুমি সুস্থ হও, খুব সহজ ব্যাপার। যখন তুমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অংশগ্রহণ করেছ এবং তুমি যথেষ্ট ভালো খেলছো। আপনি যেকোনো শীর্ষ খেলোয়াড়কে জিজ্ঞেস করুন তারা তিনটে ফরম্যাটেই খেলতে চায়, তারা লাল বল বা সাদা বলের প্লেয়ার হিসেবে চিহ্নিত হতে চান না, এবং ইনজিওর হওয়া একজন ক্রীড়াবিদের জীবনের অংশ।”

 

তিনি আরও বললেন।

“যদি তুমি তিনটে ফরম্যাটে খেলো তবে তুমি আঘাত পাবে, তুমি ফিরে যাও সুস্থ হও কিন্তু তোমার অবশ্যই তিনটে ফরম্যাটে খেলা উচিত। আমি কখনোই প্লেয়ারদের এভাবে আলাদা করার পক্ষপাতি নই যে এই প্লেয়ারটাকে দিয়ে আমরা টেস্ট খেলাবো বা অন্য ফরম্যাটের জন্য রাখবো। আমরা তার আঘাত এবং ওয়ার্ক লোডের বিষয়টি পরিচালনা করব। পেশাদার ক্রিকেটার হিসাবে, তোমরা তোমাদের জীবনের খুব কম সময় পাবে যখন তোমরা তোমাদের দেশের জন্য খেলতে পারবে, এবং তুমি যতটা সম্ভব তোমার দেশের জন্য খেলার চেষ্টা করবে। এবং তুমি যখন তোমার সবচেয়ে ভালো ফর্মে থাকবে তখন এগিয়ে যাও তিনটে ফরম্যাটেই খেলো।”

 

গম্ভীর তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের দিনগুলিতে আক্রমণাত্মক স্টাইল এর খেলার জন্য পরিচিত ছিল। যখন সে ক্রিকেটের ম্যানেজমেন্টে যুক্ত হলো তখন সে সঙ্গে করে তার এই আক্রমণাত্মক স্টাইল টাও নিয়ে গিয়েছিল। এমনিতেও ক্যাপ্টেন হিসেবে তার কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং লখনও সুপার জয়েন্টে তার আক্রমনাত্মক ভূমিকা সর্বজনবিদিত।

 

খেলার প্রতি তার অ্যাপ্রচ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন যে তার খেলোয়াড়দের প্রতি একটাই বার্তা,  সততার সাথে খেলো, সত্যনিষ্ঠার সাথে খেলার চেষ্টা করো। যতটা সম্ভব আপনার পেশার প্রতি সততা বজায় রাখার চেষ্টা করুন। 

সফলতা তোমায় অনুসরণ করবে।

যখনই আমি ব্যাট হাতে নিয়েছি কখনোই ফলাফলের বিষয়ে চিন্তা করিনি। আমি কখনোই ভাবিনি যে আমি এত রান করব। আমি সবসময় বিশ্বাস করেছি যতটা সম্ভব আমার পেশার প্রতি সততা বজায় রাখতে।

কিছু মূল্যবোধ মেনে চলুন ,কিছু নীতি মেনে চলুন, সঠিক কাজ করার চেষ্টা করুন। এমনকি গোটা পৃথিবী আপনার বিরুদ্ধে গেলেও এমন কিছু করার চেষ্টা করুন যা আপনি বিশ্বাস  করেন যে পুরো, দলের স্বার্থে সঠিক কাজ করছেন। তিনি আরও যোগ করেন – যদিও আমি ক্রিকেট মাঠে আক্রমণাত্মক ছিলাম, যদিও আমার অনেকের সাথে সংঘাত হয়েছে, সবই ছিল দলের সর্বোত্তম স্বার্থে। এটি করার চেষ্টা করুন কারণ, শেষ পর্যন্ত, দলটাই গুরুত্বপূর্ণ, ব্যক্তিগত স্বার্থ নয়। তাই এই জায়গাটা থেকে বেরও এবং শুধু মাত্র একটা বিষয় এই চিন্তা করো না হলো নিজের টিমকে জেতানোর। যে টিমের জন্যই খেলনা কেন, দলগত খেলা সেটাই ডিমান্ড করে।এটা স্বতন্ত্র কোনো খেলা নয় যে তুমি শুধু তোমার নিজের বিষয়েই ভাববে। এটা একটা দলগত খেলা, দলটাই এখানে প্রাধান্য পাবে। এবং সবশেষে তুমি নিজের বিষয়ে ভাববে।

Goutam Gambhir worldcup 2011
Goutam Gambhir, worldcup 2011

২০০৭ সালের আইসিসি মেনস্ টি২০ বিশ্বকাপ এবং ২০১১ সালের আইসিসি মেনস্ ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের জয়ে বড়ও ভূমিকা পালন করেছিলেন গম্ভীর। এবং ২০১২ এবং ২০১৪ সালে কলকাতা নাইটরাইডার্স এর ক্যাপ্টেন হিসাবে দলকে এনে দিয়েছিলেন শিরোপা। আর সাম্প্রতিক কালে ২০২৪ সালে কলকাতা নাইটরাইডার্স এর প্রধান কোচ হিসাবে দলকে আরও একটি শিরোপা এনে দিয়েছেন। ভারতের প্রধান কোচ হিসাবে তার এই সাফল্য কতটা বজায় থাকে তা সময় বলবে, তবে ভারতের অগণিত ক্রিকেট প্রেমী যে আশায় বুক বাঁধছে তা বলাই যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *