Kolkata Derby: পুলিশের লাঠিচার্জ, রণক্ষেত্র যুবভারতী চত্বর
আরজি কর কাণ্ডে তোলপাড়ের মধ্যে বাতিল করা হয়েছিল আজকের ডার্বি, গ্যালারিতে প্রতিবাদ আছড়ে পড়ার আশঙ্কায় বাতিল করা হয়েছিল ম্যাচ। বিধান নগর কমিশনারেট থেকে জানানো হয়েছিল পর্যাপ্ত পুলিশ পাওয়া সম্ভব নয় বলেই আজকের ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে।
আজকের ডার্বি অন্য সময়ের ডার্বির মতো ছিল না কারণ, চিরো প্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল আজকে একটি ভ্রাতৃত্ব পূর্ন ম্যাচ খেলতে যাচ্ছিল। যেখানে তাদের একটাই স্লোগান ছিল “দুই গ্যালারি এক স্বর জাস্টিস আরজি কর”।
কিন্তু ম্যাচটি বাতিল করা হয় এই বলে যে গ্যালারিতে থাকা প্রায় ৬০ হাজার দর্শককে নিরাপত্তা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত পুলিশ পাওয়া এই মুহূর্তে পাওয়া সম্ভব নয়।
ম্যাচ ভেস্তে গেলেও যুবভারতীর বাইরে দুই দলের সমর্থকরা একত্রিত হয়ে প্রতিবাদে সামিল হবেন ঠিক করেছিলেন। ঠিক হয়েছিল আরজিকরের ঘটনার বিচার চেয়ে লাল হলুদ পতাকা উড়বে একই সঙ্গে।
সেই মতোই শুরু হয় বিক্ষোভ কর্মসূচি, কিন্তু সেই বিক্ষোভে পুলিশ লাঠিচার্জ করে।সাম্প্রতিক পাওয়া খবর অনুযায়ী নিরস্ত্র সমর্থকদের ওপর নারী পুরুষ নির্বিশেষে, সকলের ওপর নির্মম লাঠিচার্জ শুরু করে বিধাননগর থানার পুলিশ।
জমায়েত রুখতে আগেই ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছিল। পুলিশের কথামত যুবভারতীর ভিআইপি গেটের ২০০ মিটার দূরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয়েছিলেন মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গল এবং মোহামেডানের সমর্থকেরা। কিন্তু তার পরও পুলিশ লাঠিচার্জ করে, তারা করে সমর্থকদের। আটক করা হয় সমর্থকদের অনেককে। এমনকি মহিলা সমর্থকদেরও ছাড়া হয়নি। টেনে হিঁচড়ে তোলা হয় প্রিজন ভ্যানে।
সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দেয় জনতা তাদের দাবি যদি ডার্বি ক্যান্সেল করার ছিল তাহলে অফলাইন টিকিটের লাইনে সারারাত সমর্থকদেরকে কেনো দাঁড় করানো হলো?ইতিমধ্যেই ডুরান্ড কাপ অন্য জায়গায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে ফোন করে হুমকির অভিযোগ ইস্টবেঙ্গল সমর্থকের।
অন্যদিকে ট্রেনি চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় তদন্তকারী কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিবিআই) টানা তৃতীয় দিনের মতো রাজ্য পরিচালিত আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল ডা. সন্দীপ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। পিটিআই জানিয়েছে, সিবিআই ডা. ঘোষকে ঘটনাটির আগে ও পরে করা ফোন কলের তথ্য সরবরাহ করার জন্যও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, সিবিআই মোবাইল সার্ভিস প্রভাইডার এর সাথে যোগাযোগ করে ডা. ঘোষের কল রেকর্ডগুলি অ্যাক্সেস করার পরিকল্পনা করছে। শনিবার সকাল ১০টা থেকে আজ মধ্যরাত পর্যন্ত প্রায় ১৩ ঘণ্টা ধরে ডা. ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে আবারও সল্ট লেকের সিবিআই অফিসে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
সিবিআই কর্মকর্তা পিটিআইকে বলেছেন, “আমাদের কাছে তার জন্য প্রশ্নের তালিকা রয়েছে।” তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে যে তিনি মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর কী ভূমিকা পালন করেছেন? তিনি কাদের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন এবং কেন তিনি প্রায় তিন ঘন্টা ধরে অভিভাবকদের অপেক্ষা করিয়েছিলেন? প্রাক্তন প্রিন্সিপালকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল যে ঘটনাটির পরে হাসপাতালের জরুরি বিল্ডিংয়ের সেমিনার হলের কাছে রুমগুলির সংস্কারের নির্দেশ কে দিয়েছিল।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ভয়াবহ ঘটনার পর, গোটা দেশে ডাক্তাররা এবং সাধারণ মানুষ মিলিতভাবে একটাই দাবি তুলেছেন—ন্যায়বিচার। যতদিন না অপরাধীরা কঠোর শাস্তি পাচ্ছে এবং দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে, ততদিন এই আন্দোলন থামবে না।