পিতৃহারা Malaika Arora! ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা অনিল আরোরার
বলিউড তারকা Malaika Arora-র পিতা অনিল অরোরা আজ, ১১ সেপ্টেম্বর,বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এই ঘটনাটি মুম্বাইয়ের আয়েশা ম্যানর নামক একটি আবাসিক ভবনে ঘটে, যা অরোরা পরিবারের আবাসস্থল। অনিল অরোরার এই আকস্মিক এবং হৃদয়বিদারক মৃত্যু গোটা বলিউড ইন্ডাস্ট্রি এবং তার পরিবারের জন্য এক মর্মান্তিক আঘাত হিসেবে এসেছে।
সোমবার সকালে, মুম্বাইয়ের আয়েশা ম্যানর নামক একটি বহুতল আবাসিক ভবনের ছাদ থেকে নিচে লাফিয়ে পড়েন অনিল অরোরা। পরিবারের সদস্যরা তৎক্ষণাৎ তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ আত্মহত্যার ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যদিও ঘটনার পেছনে প্রকৃত কারণ এখনো স্পষ্ট নয়।
পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন কিন্তু এখনো ঘটনাস্থল থেকে কোন সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি, ঘটনার প্রকৃত কারণ কি তাই নিয়ে তদন্তকারী অফিসাররা খোঁজ চালাচ্ছেন।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় মালাইকা অরোরা এবং তার পরিবারের সদস্যরা গভীর শোকে মূহ্যমান। মালাইকার প্রাক্তন স্বামী, বলিউড অভিনেতা আরবাজ খান, খবর পাওয়ার পর তৎক্ষণাৎ আয়েশা ম্যানরে পৌঁছান। তিনি কোনোরকম মিডিয়া সাক্ষাৎকার বা ছবি তোলা এড়িয়ে সরাসরি পরিবারের সাথে যোগ দেন।
বলিউডের শোকপ্রকাশ
অনিল অরোরার আকস্মিক মৃত্যু গোটা বলিউড ইন্ডাস্ট্রি এবং তার পরিবারের জন্য একটি বড় আঘাত হিসেবে এসেছে। অনিল অরোরা, যিনি পরিবার এবং বন্ধুদের কাছে একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তার এই ধরনের পদক্ষেপ পুরো ইন্ডাস্ট্রিকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে।
অনিল অরোরার আকস্মিক মৃত্যুতে বলিউড ইন্ডাস্ট্রি শোকাহত। মালাইকা অরোরার সহকর্মী এবং বন্ধুরা সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং তাদের সমবেদনা জানিয়েছেন। বলিউডের বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব এবং অনুরাগীরা মালাইকা ও তার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
মালাইকা ও অনিল অরোরার সম্পর্ক
অনীল অরোরা মূলত পাঞ্জাবের বাসিন্দা ছিলেন, তিনি মার্চেন্ট নেভির সাথে কাজ করেছেন। মালাইকা অরোরা এবং তার পিতা অনিল অরোরা একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ভাগাভাগি করতেন। মালাইকা সবসময়ই তার পিতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং কৃতজ্ঞ ছিলেন। মালাইকা অরোরার বাবা-মা যখন ডিভোর্স নিয়ে আলাদা হয়ে যান, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর এবং তার ছোট বোন অমৃতা রাও এর বয়স তখন সবে ৬ বছর। তিনি এবং তার ছোট বোন অমৃতা রাও, তাদের মা জয়েস পলিকর্পের কাছে বড় হন।
মালাইকা একজন অভিনেত্রী, মডেল, নৃত্যশিল্পী এবং ভিডিও জকি হিসেবে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের ছাপ রেখেছেন। তিনি কান্তে এবং ইএমআই এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তিনি ছাইয়া ছাইয়া, গুর নালো ইশক মিঠা, মাহী ভে, কালের ধামাল এবং মুন্নি বদনাম এর মতো গানে পারফর্ম করেছেন। তার পিতার এই অকাল মৃত্যু মালাইকাকে গভীর শোকে আচ্ছন্ন করেছে। মালাইকা তার পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের সাথে এই সময়ে নিজেদের সামলানোর চেষ্টা করছেন।
মালাইকা অরোরার পিতার মৃত্যুর খবরে প্রাক্তন স্বামী আরবাজ খানের জরুরি সফর: পরিবারের পাশে থাকার সংকল্প
বলিউড অভিনেতা আরবাজ খান তার প্রাক্তন স্ত্রী মালাইকা অরোরার পরিবারের পাশে থাকার জন্য তৎক্ষণাৎ তাদের বাসভবনে পৌঁছেছেন। মালাইকা অরোরা এবং আরবাজ খানের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে বলিউডে আলোচিত হয়েছে, এবং বিচ্ছেদের পরেও তাদের পারিবারিক বন্ধন ছিল দৃঢ়। মালাইকা অরোরা এবং আরবাজ খান ১৯৯৮ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং তাদের বিবাহ দীর্ঘ ১৮ বছর স্থায়ী হয়। ২০১৬ সালে, তারা বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন, যা বলিউডে একটি আলোচিত ঘটনা হয়ে ওঠে। তবে, বিচ্ছেদের পরেও তারা তাদের সন্তান আরহানের জন্য ভালো সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। এছাড়াও, পারিবারিক অনুষ্ঠানে তারা একসঙ্গে অংশগ্রহণ করেছেন, যা প্রমাণ করে যে বিচ্ছেদ সত্ত্বেও তাদের মধ্যে পারিবারিক বন্ধন বজায় ছিল। এই কঠিন সময়ে মালাইকার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে আরবাজের এই পদক্ষেপ তার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং পারিবারিক মূল্যবোধের পরিচয় বহন করে।
আত্মহত্যা প্রতিরোধ এবং মানসিক স্বাস্থ্য
অনিল অরোরার এই মর্মান্তিক আত্মহত্যা আমাদের সমাজে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার গুরুত্বের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মানসিক চাপ এবং হতাশা থেকে মুক্তি পেতে সময়মতো মানসিক স্বাস্থ্য পরিসেবা গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আত্মহত্যা প্রতিরোধে পরিবার এবং সমাজের সদস্যদের সহায়তা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে।
সমাজের প্রত্যেকেরই মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত, যাতে এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা রোধ করা যায়। মালাইকা অরোরা এবং তার পরিবারকে এই কঠিন সময়ে সমস্ত ধরনের সহানুভূতি প্রদর্শন ও পাশে থাকার বার্তা নিয়ে সমস্ত বলিউড এগিয়ে এসেছে।